হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বৃদ্ধ বাবার স্বপ্ন পূরণ করলেন প্রবাসী ছেলে

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি।

0
378
হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বৃদ্ধ বাবার স্বপ্ন পূরণ
হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বৃদ্ধ বাবার স্বপ্ন পূরণ করলেন মরিশাস প্রবাসী ছেলে আকাশ মিয়া।
হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বৃদ্ধ বাবার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ করলেন মরিশাস প্রবাসী ছেলে আকাশ মিয়া। ঘঠনটি ঘটেছে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গায়। বিদেশে যাওয়ার আগে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার ভাড়া করে বাবা জাকির মিয়াকে নিয়ে গ্রাম থেকে আবার ঢাকায় যান ছেলে আকাশ মিয়া (৩৯)।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে আলফাডাঙ্গা উপজেলার জাটিগ্রাম এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে হেলিকপ্টারে চড়েন বাবা ও ছেলে।

হেলিকপ্টার এবং বাবা ও ছেলের এমন দৃশ্যটি স্বচক্ষে দেখতে গ্রামবাসী জড়ো হন বিদ্যালয়ের মাঠে। বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ার আগে প্রবাসী আকাশ মিয়াকে গ্রামের মানুষ ও তাদের আত্মীয় স্বজনেরা বিদায় দেন। এ সময় তাদের সফরসঙ্গী ছিলেন, প্রবাসী আকাশ মিয়ার ছেলে জাহিদ মিয়া ও সমাজসেবক আশিকুর রহমান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রবাসী আকাশ মিয়া আলফাডাঙ্গা উপজেলার জাটিগ্রাম পশ্চিমপাড়া এলাকার জাকির মিয়ার ছেলে। প্রায় ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মরিশাসে থাকেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার মরিশাস থেকে দেশে ফেরেন। তার বাবা জাকির মিয়ার (৬৪) দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিলো হেলিকপ্টারে চড়া।

তাই বৃদ্ধ বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে হেলিকপ্টার ভাড়া করে নিজ গ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরে যান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আবারও প্রবাস জীবনে ফিরে যাবেন তিনি।

তার এলাকার মিয়া রাকিবুল বলেন, গ্রাম থেকে প্রথম হেলিকপ্টারে গিয়েছেন আকাশ মিয়া। সেই সঙ্গে বাবার স্বপ্ন পূরণে তাকেও সঙ্গে নিয়েছেন। বাবার প্রতি ছেলের এমন ভালোবাসা দেখে আমরা মুগ্ধ।

উক্ত এলাকার সমাজসেবক আশিকুর রহমান বলেন, আকাশ মিয়া করোনা কালীন সময়ে মরিশাসের আসমোক কোম্পানী লিমিটেডের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকার মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন গুণীজনের মাধ্যমে পাঁচ শতাধিক হতদরিদ্র পরিবারের নামের তালিকা তৈরি তাদের সহায়তা করেছেন।

তাদের খাদ্য সহায়তার কার্ড তৈরি করে প্রায় দুই বছর ধরে প্রতি মাসে পাঁচ কেজি করে চাল দিয়েছেন। ঈদের সময় সেমাই-চিনি থেকে শুরু করে গরুর মাংস পর্যন্ত বিতরণ করেন। সেই সাথে নতুন পোশাকও উপহার দেন।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আর্থিক অনুদান, খেলার সরঞ্জাম, চিকিৎসা ও ঘর তৈরি করে দেন। শুধু তাই নয়, খাদ্য সহায়তা নিতে আসা হতদরিদ্রদের যাতায়াতের ভাড়াও দিয়ে দেন। এসব মানবিক কার্যক্রমের কারণে সর্ব মহলের প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।

মরিশাস প্রবাসী আকাশ মিয়া বলেন, আমার বাবার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল হেলিকপ্টারে চড়া। বাবার প্রতি ভালোবাসা এবং তার স্বপ্ন পুরণ করতেই আমার এই উদ্যোগ। এতদিন পর হলেও বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে নিজের কাছে বেশ ভালো লেগেছে।

এই বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদুল হাসান বলেন, প্রবাসী আকাশ মিয়া একজন মানবিক গুণাবলি সম্পন্ন মানুষ। বাবার স্বপ্ন পুরণ করা প্রত্যেক ছেলেরই কর্তব্য। হেলিকপ্টারে চড়িয়ে আকাশ মিয়া তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করায় আমি ব্যক্তিগতভাবে তার প্রশংসা করি। এ যেন বাবার প্রতি ছেলের ভালবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।