মেরিটে এগিয়ে থেকেও সুপারিশ পাননি আইসিটি নিবন্ধনধারীরা

এনটিআরসিএ প্রতিনিধি।

0
398
মেরিটে এগিয়ে থেকেও

অন্যদের থেকে মেরিটে এগিয়ে থেকেও কোনো কলেজেই চাকরির সুপারিশ পাননি আইসিটি বিষয়ে শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা। বরং মেধাতালিকায় পিছিয়ে সিএসই বিষয়ে নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করা প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সুপারিশ পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

জানতে চাইলে এ বিষয়ে এনটিআরসিএ কতৃপক্ষ বলেন, যাদের নম্বর বেশি এবং মেধাতালিকায় এগিয়ে রয়েছেন, তাদেরকেই চাকরির জন্য প্রাথমিক সুপারিশ করা হয়েছে। আর এই সুপারিশ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে। এখানে ভুল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

তবে আইসিটি বিষয়ের নিবন্ধন সনদধারীরা এনটিআরসি-এর এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাদের দাবি, তারা মেধাক্রমে এগিয়ে থেকেও ভালো প্রতিষ্ঠানে সুপারিশ পাননি। এমনকি অনেকে আবার কোনো প্রতিষ্ঠানেয় সুপারিশ পায়নি। অন্যদিকে, সিএসই সাবজেক্ট থেকে সনদ পাওয়া ব্যক্তিরা মেধাক্রমে বা মেরিটে পিছিয়ে থাকলেও তারা ভালো প্রতিষ্ঠান পেয়েছেন। যদিও চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির একটি ধারায় বলা হয়েছে, শূন্যপদ এবং মেধাক্রম অনুযায়ী সুপারিশ করা হবে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি উল্লেখ থাকলেও প্রাথমিক সুপারিশের ক্ষেত্রে ধারাটি মানা হয়নি বলে অভিযোগ আইসিটি প্রার্থীদের।

উল্লেখ্য, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির ৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, প্রার্থীর আবেদনে বর্ণিত চয়েচ এর প্রেক্ষিতে প্রার্থীর মেধাক্রম ও পছন্দক্রম অনুসারে প্রাথমিক সুপারিশের ফলাফল Process করা হবে।

এ প্রসঙ্গে ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আইসিটি বিষয়ের সনদধারী মো: জাহাঙ্গীর কবীর দৈনিক শিক্ষাবার্তা কে বলেন, ‘আমি ৪র্থ গনবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সময় মাগুরা নাজির আহমেদ কলেজকে ৫ নম্বর পছন্দক্রমে রেখেছিলাম। সেখানে সিএসই বিষয়ে শিক্ষক নিবন্ধন থেকে ৩১৯ মেধাক্রম থেকে সিলেক্ট করা হয়েছে। অথচ আমার আইসিটি বিষয়ে মেধাক্রম ২৬৬। এখানে অবশ্যই আমার সিলেক্ট হওয়ার কথা থাকলেও আমার থেকে দূরের মেধাক্রমের একজনকে সিলেক্ট করা হলো।’

অপরদিকে, ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনে জাতীয় মেধাক্রমে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছেন মো: আল মেহেদী। তিনি দৈনিক শিক্ষাবার্তা কে বলেন, আমার চয়েজ অর্ডারের ১ম এবং ২য় কলেজে কম্পিউটার সায়েন্সের ১৮৯ ও ৭০ মেধাক্রমকে সুপারিশ করা হয়েছে। অথচ আমি মেধাক্রমে পঞ্চম অবস্থানে থেকেও কেন সুপারিশ পাইনি। অবিলম্বে আইসিটির ফলাফল বাতিল করে মেধাক্রমের ভিত্তিতে নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।

এছাড়া কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইসিটি বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স করেছেন মো: কবির হোসেন। তার ১৬তম নিবন্ধন পরীক্ষায় মেধাক্রম ২৫২। তিনি বলেন, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে কলেজ পর্যায়ে ‘আইসিটিতে’ আইসিটি বিষয়ের প্রার্থীরাই বঞ্চিত হয়েছেন। শুধুমাত্র আইসিটি বিষয়ের রেজাল্ট বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে এ প্রহসনের দ্রুত সমাধান চাই।

তিনি আরও বলেন, আমার মেরিট ২৫২। আমার পছন্দের প্রথম ১৪টি কলেজের মধ্যে ১০টি কলেজে নির্বাচিত প্রার্থীরা সিএসই বিষয়ের এবং তাদের মেধাতালিকা আমার পেছনে। আমাদের আইসিটি বিষয়কে বঞ্চিত করে এই নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ বৈষম্যের শিকার। এই অন্যায় ও প্রহসনের নিয়োগ বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

প্রার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে এনটিআরসি-এর সচিব মো: ওবায়দুর রহমান গণমাধ্যম কে বলেন, প্রার্থীরা আবেদন করেছেন অনলাইনে। তাদের আবেদন যাচাই-বাছাইও করা হয়েছে কম্পিউটারের মাধ্যমে। এটি অটোমেটিক একটি প্রক্রিয়া। এখানে কিছু ভুল হতেই পারে।

তিনি আরো বলেন, যারা মেরিটে এগিয়ে থেকেও আইসিটি বিষয়ে নিয়োগের সুপারিশ পাননি, যাদের এমন সমস্যা হয়েছে তারা সকল তথ্য প্রমাণসহ আমাদের কাছে লিখিত আবেদন দিক। আমরা তাদের আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।