বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোর্স আইইএলটিএসের স্কোর বাড়ানোর ফাঁদ পেতে এবং বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া সার্টিফিকেট বানিয়ে দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতকারী চক্রের মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ব্যক্তির নাম নাকিব ওসমান (৩৬)।
রাতে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান গণমাধ্যম কে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারে অভিযোগ আসে একটি চক্র অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে আইইএলটিএসের স্কোর বাড়িয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সাইবার পুলিশ সেন্টার অভিযোগটি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে।
অনুসন্ধানকালে জানা যায়, একটি চক্র ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে সহজে আইইএলটিএস স্কোর ৮ এর উপরে পাইয়ে দেওয়ার লোভনীয় বিজ্ঞাপন দেয়। বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা তাদের হোয়াটসঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারের সিক্রেট গ্রুপের ইনবক্সে যোগাযোগ করলে তখন চক্রটি আগ্রহী প্রার্থীদের টার্গেট করে বিনা পরীক্ষায় আইইএলটিএসে ৮ এর বেশি স্কোর পাওয়ার নিশ্চয়তা দেয়। এভাবে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আত্মসাত করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
গোয়েন্দা বিভাগের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, সাধারণত বিদেশে উচ্চশিক্ষা, চাকরি অথবা ব্যবসার জন্য যেতে চাইলে আইইএলটিএসের স্কোর ৭ এর বেশি প্রয়োজন হয়, আর তাই আগ্রহীরা খুব সহজেই এ সংঘবদ্ধ চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, শুধুমাত্র আইইএলটিএসের স্কোর বাড়ানোই নয়, পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া সার্টিফিকেট তৈরি করতো। এক্ষেত্রে তার সঙ্গে কয়েকজন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারী জড়িত।
শিক্ষার্থীরা বাইরের দেশে যেসব বিষয়ে পড়তে আগ্রহী, সেসব বিষয়ের ভুয়া সার্টিফিকেট দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অসাধু শিক্ষকের সহায়তায় তৈরি করে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করতো।
চক্রটির বাকি সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান। তিনি আরও বলেন এসব প্রতারক চক্র থেকে বিদেশে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী সকল শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকতে হবে। এমন ধরনের কোনো ঘটনা ঘটার আগেই তারা যেন সাইবার অফিসে যোগাযোগ করে। এ সমস্ত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা একান্ত জরুরী।